একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের গ্রাম-গঞ্জে শিক্ষার কোনো সুব্যবস্থা ছিল না। বিদ্যালয় ছিল না, ছিল না শিক্ষার সুযোগ, ছিল না স্বপ্ন দেখার সাহস। সেই অন্ধকার সময়ে, স্বাধীনতার আগেই একজন সাহসী, দূরদর্শী এবং মানবপ্রেমী মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে। তিনি হলেন মরহুম গাজী আশরাফ উদ্দিন আহমেদ। একজন সাদাসিধে, নিঃস্বার্থ মানুষ, যিনি জীবনের প্রায় পুরোটাই ব্যয় করেছেন সমাজ গঠনে, মানুষের কল্যাণে।
🏫 ধানখালী আদর্শ বিদ্যালয় শিক্ষার দীপ্ত আলো
গ্রামের মানুষ যখন শিক্ষার মূল্য বুঝত না, তখন তিনি নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন ধানখালী আদর্শ বিদ্যালয় যেটি হয়ে ওঠে ওই অঞ্চলের শিক্ষার প্রথম দীপ্ত আলো। বাঁশ আর টিন দিয়ে তৈরি সেই বিদ্যালয় ঘরে প্রথমবারের মতো শিশুরা বইয়ের গন্ধ পায়, কলম ধরতে শেখে, স্বপ্ন দেখতে শেখে।
তিনি বলতেন:
“শিক্ষা না থাকলে মানুষ অন্ধ থাকে, আর অন্ধ মানুষ দিয়ে দেশ গড়া যায় না।”
আজ এই বিদ্যালয় শত শত শিক্ষার্থীর জীবন গড়ে তুলছে, যেখানে প্রতিটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বই, নৈতিকতা আর মূল্যবোধ নিয়ে বেড়ে উঠছে।
🧑⚖️ জননেতা হিসেবে ৩৫ বছরের অবিস্মরণীয় অবদান
মরহুম গাজী আশরাফ উদ্দিন আহমেদ একটানা ৩৫ বছরের বেশি সময় ধানখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বে ধানখালী ইউনিয়ন পায় রাস্তা, শিক্ষা, পানীয় জল ও মানবিক সহায়তার স্পর্শ। তিনি কখনো রাজনীতিকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করেননি। তার কাছে মানুষ ছিল রাজনীতি, আর সেবা ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য।
🕯️ মৃত্যু ও স্মৃতির উত্তরাধিকার
১৯৯১ সালে ২৯ ডিসেম্বর তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। কিন্তু মানুষ আজও তাঁকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করে। আজও যখন কেউ ধানখালীতে শিক্ষা বা উন্নয়নের কথা বলে, তাঁর নাম শ্রদ্ধাভরে উচ্চারিত হয়। তাঁর অবদান মুছে যায়নি মাটির পথ, স্কুলের বারান্দা, আর মানুষের কণ্ঠে তিনি বেঁচে আছেন আজীবন।
📚 শিক্ষার আলো আজও জ্বলছে
ধানখালি এস এইচ এ্যান্ড আশ্রাফ একাডেমী আজ শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় এটি একটি স্বপ্ন, একটি চেতনা এবং ভালোবাসার ফল। প্রতিদিন যখন ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসে, তারা নিজের অজান্তেই হাঁটে মরহুম গাজী আশরাফ উদ্দিন আহমেদ-এর স্বপ্নের পথে।
🔔 শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা
আমরা আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব এই মহান মানুষের প্রতি, যিনি একটি গ্রামকে শুধু শিক্ষিত করেননি একটি প্রজন্মকে আলোকিত করে গেছেন।
📌 যদি আপনি চান, এই গল্পটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানুক, তাহলে ছড়িয়ে দিন। কারণ ইতিহাস তখনই বেঁচে থাকে, যখন আমরা তাকে স্মরণ করি।